বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি

এই আর্টিকেলটিতে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। অনেকেই বস্তায় আদা চাষ করতে চান। যারা বস্তায় আদা চাষ করতে আগ্রহীঠ তারা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বস্তায়-আদা-চাষের-পদ্ধতি

বর্তমানে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে চাষ করে মানুষ নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারে। তবে বর্তমানে এখন বাণিজ্যিকভাবেও বস্তায় আদা চাষ করা হচ্ছে। আদার দাম প্রচুর থাকায় আদা একটি লাভজনক কৃষি পণ্য  হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পেজ সূচিপত্রঃ বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি

বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আদা চাষের জন্য বিশেষভাবে নজর দিচ্ছেন। কারণ আমাদের দেশের উৎপাদিত আদা মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। আমাদের বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় তিন লক্ষ্য মেট্রিক টন আদা উৎপাদন হয়। এই উৎপাদিত আদা মানুষের চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। আমরা বাড়ির উঠোনে এবং বাড়ির ছাদে বস্তায় আদা চাষ করে নিজের চাহিদা মেটাতে পারি। 

বর্তমানে অনেকেই বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি অনুসরণ করে বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। এই পদ্ধতিতে আদা চাষ বর্তমানে মনুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। যাদের বাড়ির ছাদে একটু ফাঁকা জায়গা রয়েছে, বাড়ির আশে পাশে ফাঁকা জায়গা রয়েছে এবং বাড়ির উঠোনে ফাঁকা জায়গা রয়েছে তারা খুব সহজেই এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারে। এছাড়া যদি বেশি উৎপাদিত হয় তাহলে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারে। বস্তায় আদা চাষে পদ্ধতিগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে যদি আদা চাষ করা হয়। তবে আদার ফলন অনেক ভালো হয়। বাণিজ্যিকভাবে যারা বস্তায় আদা চাষ করছে তারা উৎপাদিত আদা বাজারে বিক্রি করার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছে। এর ফলে আর্থিকভাবে প্রচুর লাভবান হচ্ছে।

বস্তায় আদা চাষের জন্য মাটি তৈরি করণ

বস্তায় আদা চাষ করার জন্য কমপক্ষে ১৫ দিন আগে আদার কন্দ রোপনের জন্য মাটি তৈরি করতে হবে। কন্দ বা রাইজোম জাতীয় ফসলের জন্য নরম ও ঝরঝরে মাটি বেশি ভালো। এসব মাটিতে কন্দ খুব সহজে মাটির নিচে কন্দ বড় হয়। ফলে কন্দ বা রাইজোম জাতীয় ফসলের ফলন অনেক ভালো হয়। শক্ত মাটিতে আদার ফলন ভালো হয় না। কারণ শক্ত মাটিতে আদার কন্দ বড় হতে পারে না। নিম্নে লিখিত সব সার একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ১২ থেকে ১৫ দিন কালো পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ১২ থেকে ১৫ দিন পরে পলিথিন উঠিয়ে নিতে হবে। এরপর মাটিগুলো উল্টাপাল্টা করে আবার ২৪ ঘন্টা রাখতে হবে। এরপর বস্তায় ভরে দুই থেকে তিন দিন পরে আদার কন্দ রোপন করতে পারবেন।

  • প্রতি বস্তায় ১৫ কেজি করে মাটি দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ৫ থেকে ৬ কেজি জৈব সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ২০ গ্রাম করে টি এস পি সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ১০ গ্রাম করে পটাশ সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ১০ গ্রাম করে জিপসাম  সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ৫ গ্রাম করে জিংক সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় ৫ গ্রাম করে বোরন সার দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় দানাদার কীটনাশক ১০ গ্রাম করে দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় কাঠের গুড়া ১ কেজি করে দিতে হবে।
  • প্রতি বস্তায় এক কেজি করে ছাই সম্ভব হলে দিতে হবে।
  • যদি মাটি বেলে দোআঁশ না হয় তাহলে কিছু পরিমাণ বালু মাটির সাথে যুক্ত করতে হবে

বস্তায় আদা চাষের জন্য বস্তা তৈরি করার পদ্ধতি

বস্তায় আদা চাষ করার জন্য অবশ্যই সঠিক নিয়মে বস্তা মাটি দিয়ে ভর্তি করতে হবে। সঠিকভাবে বস্তা মাটি দিয়ে ভর্তি করলে আদার কন্দ রোপন, সেচ, সার এবং  পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে পারবেন। বস্তায় আদা চাষের জন্য বস্তাগুলো এমন ভাবে ভর্তি করবেন যেন বস্তার উপরে অংশ ২ থেকে ৩ ইঞ্চির মতো খালি থাকে। বৃষ্টির পানিতে যেন মাটি গুলো জমাট না বাধে এমন জায়গায় বস্তা রাখতে হবে।

প্রতি বস্তা ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পরপর দূরত্বে রাখতে হবে। এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব এক মিটার করে রাখতে হবে। এর ফলে আপনি বস্তাগুলোর মধ্যখান দিয়ে সহজেই চলাচল করতে পারবেন এবং ভালোভাবে আদার কন্দ রোপন করতে পারবেন। এছাড়াও  বস্তাগুলোতে সময় মত সঠিকভাবে সার দিতে পারবেন। আবার পানি দিতেও সুবিধা হবে এবং সঠিকভাবে পরিচর্যাও করতে পারবেন।

বস্তায় আদা চাষের জন্য আদার কন্দ রোপনের পদ্ধতি

বস্তায় আদা চাষের জন্য আদার কন্দ সঠিকভাবে রোপন করতে হবে। আপনি যদি আদার কন্দ ভালোভাবে শোধন না করেন এবং সঠিক নিয়মে আদার কন্দ মাটির ভিতরে রোপণ না করেন। তাহলে আদার ফলন ভালো হবে না। তাই অবশ্যই আদা চাষের জন্য আদার কন্দ রোপনের সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক বস্তায় আদা চাষের জন্য আদার কন্দ রোপনের সঠিক পদ্ধতি।

প্রথমে এক লিটার পানিতে ১ গ্রাম অটোস্টিন মিশিয়ে রাখতে হবে। এরপর অটোস্টিন মেশানো সেই পানিতে এক কেজি আদার কন্দ এক ঘন্টার মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। এক ঘন্টা পরে আবার কন্দগুলো তুলে ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপরে তৈরিকৃত প্রতি বস্তাগুলোতে মাটির ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি নিচে ৪০ থেকে ৫০ গ্রামের আদার কন্দ লাগাতে হবে।

বস্তায় আদা চাষের জন্য সার প্রয়োগ পদ্ধতি

বস্তায় আদা চাষের জন্য সার প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যদি সঠিক ভাবে সার প্রয়োগ করা না হয়। তাহলে আদার ফলন ভালো হবে না। তাই অবশ্যই আদা চাষের জন্য সঠিক সময়ে এবং পরিমিত পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হবে। তাই বস্তায় কখন কখন সার প্রয়োগ করতে হবে সে বিষয়ে অবশ্যই ভালোভাবে জেনে থাকতে হবে। বস্তায় আদা চাষ করার জন্য সাধারণত তিন বারে সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। 

বস্তায়-আদা-চাষের-জন্য-সার-প্রয়োগ-পদ্ধতি
  • প্রথমবার আদার কন্দ লাগানোর ৫০ দিন পর প্রতি বস্তায় ইউরিয়া এবং ৫ গ্রাম পটাশ একসাথে করে গাছের চারিদিকে দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। 
  • দ্বিতীয়বার আদার কন্দ লাগানোর ৮০ দিন পরে দিতে হবে। প্রতি বস্তায় ৫ গ্রাম করে পটাশ ও ইউরিয়া গাছের চারিদিকে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
  • তৃতীয়বার আদার কন্দ লাগানোর ১০০ দিন পরে সার দিতে হবে। ইউরিয়া ও পটাশ ৫ গ্রাম করে গাছের চারদিকে দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

বস্তায় আদা চাষের জন্য সেচ ও পরিচর্যা

বস্তায় আদা চাষের জন্য সেচ ও পরিচর্যা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যদি সঠিকভাবে বস্তায় সেচ ও পরিচর্যা না করেন। তাহলে আদার ফলন ভালো হবে না। তাই অবশ্যই আপনাকে বস্তায় আদা চাষের জন্য সঠিকভাবে সেচ ও পরিচর্যা করতে হবে। তাহলে আদার ফলন অনেক ভালো হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক বস্তায় আদা চাষের জন্য যেভাবে সেচ ও পরিচর্যা করতে হবে সেই সম্পর্কে।

  • সেচঃ বস্তায় আদা লাগানোর পরে যদি বৃষ্টি না হয় এবং মাটি রুক্ষ হয়ে যায় বা মাটিতে রস না থাকে। তাহলে অবশ্যই পানি সেচ দিতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে। যদি অতিরিক্ত পানি জমে থাকে তবে অবশ্যই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • পরিচর্যাঃ আদা গাছের গোড়া নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। সঠিক সময় মতো সার দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে দূরে মাটির সাথে মিশিয়ে সার দিতে হবে। আদা গাছের গোড়ার মাটি সব সময় ঝুরঝুর করে রাখতে হবে। সার দেওয়ার পরে যখন জো আসবে তখন আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। বস্তায় আদা চাষে খুবই কম রোগের দেখা দেয়। তবে যদি রোগ দেখা দেয় তাহলে যে গাছটি রোগে আক্রান্ত সেটি তাড়াতাড়ি তুলে ফেলে ধ্বংস করতে হবে। মাটি যেন ফুলে থাকে তাই ভার্মি কম্পোস্ট ও ছাই ব্যবহার করতে হবে।সঠিক পরিমাণে হাড়ের গুড়া ও জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।

বস্তায় আদা চাষে যেসব রোগের লক্ষণ দেখা যায়

রাইজম রট রোগঃ (Pythium Afanidermatum) পিথিয়াম এফানিডারমেটাম নামক এই ছত্রাকটির আক্রমণের জন্য রাইজম রট রোগ হয়। যদি এই রোগ আক্রমণ করে তাহলে আদা বড় হতে পারে না এবং গাছ খুব তাড়াতাড়ি মরে যায়। রাইজম রট রোগ মাটি, পানি ও বীজের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে আদা গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। তবে পাতাতে কোন রকম দাগ থাকে না। এরপর আস্তে আস্তে গাছ নেতিয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে শুকিয়ে মারা যায়। এজন্য আদার কন্দ পচে যায় এবং ফলন প্রচুর পরিমাণে কম হয়। ভেজা আবহাওয়ায় বা বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা তৈরি হলে এই রোগের সংক্রমণ বাড়ে।

  • পাতা ঝলসানো রোগঃ আদায় পাতা ঝলসানো রোগ অন্যতম একটি রোগ। এই রোগে প্রথমে আদার পাতায় ফ্যাকাশে হলুদ রঙের ডিম্বাকৃতি দাগ দেখা যায়। এই ডিম্বাকৃতি দাগ গুলোর মধ্যখান ধূসর রং এর হয়ে থাকে ও এর চারপাশ বাদামী রঙের হয়ে থাকে। যখন এই রোগের সংক্রমণ বেড়ে যায় তখন এই ডিম্বাকৃতি গুলো একসাথে যোগ হয়ে পুরো পাতায় ভর্তি হয়ে যায়। ফলে পাতাগুলো ঝলসে যায়।
  • কাণ্ড বা ডগা ছিদ্র রোগঃছিদ্রকারী পোকা কান্ডের ভিতর থেকে খায় বলে পাতাগুলো আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে ডেট হার্ট লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত স্থানে পোকার মল দেখা যায়। আর্দ্র আবহাওয়ায় এই রোগের সংক্রমণ বাড়ে। এই পোকা আক্রমণ করলে গাছ সহজে বাড়তে পারে না। ফলে আদার ফলন অনেক কম হয়। এই পোকাটির মাথা কমলা হলুদ রঙের হয়ে থাকে ও পাখায় কালো রংয়ের ফোটা থাকে। এই পোকার গা শুং যুক্ত হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে সাধারণত পোকাটি বাদামি রঙের হয়ে থাকে।

বস্তায় আদা চাষে লক্ষনীয় রোগের সমাধান

রাইজম রট রোগঃ আদার কন্দ অবশ্যই শোধন করে রোপন করতে হবে। তাহলে এসব রোগের হাত থেকে মুক্ত থাকা যায়। রাইজম রট রোগে আক্রান্ত গাছটি সম্পূর্ণ তুলে ধ্বংস করে দিতে হবে। রাইজম রট রোগ দেখা দিলে প্রথমে দুই গ্রাম রিডোমিল গোল্ড ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ১৫ থেকে ২০দিন পর পর মাটিতে রিডোমিল গোল্ড মিশ্রিত পানি মাটিতে দিতে হবে। অথবা ৪ গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড ৫০% ডব্লিউপি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই পানিটি ১৫ থেকে ২০ দিন পর পর মাটিতে দিতে পারেন। এর ফলে রাইজম রট রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

বস্তায়-আদা-চাষে-লক্ষনীয়-রোগের-সমাধান

  • পাতা ঝলসানো রোগঃ  আদার কন্দ অবশ্যই শোধন করে রোপন করতে হবে। তাহলে রোগবালাই থেকে অনেকটা মুক্ত থাকা যায়। পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দিলে প্রথমে ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম - ৪৫ এক লিটার পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ১৫ দিন পর পর দিনে ২ থেকে ৩ বার করে স্প্রে করতে পারেন। এর ফলে পাতা ঝলসানো রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
  • কান্ড বা ডগা ছিদ্র রোগঃ আদারকন্দ অবশ্যই শোধন করে রোপন করতে হবে। তাহলে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। কাণ্ড বা ডগা ছিদ্রকারী পোকা আক্রমণ করলে প্রথমে নুভাক্রন ১০০ ইসি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ১৫ দিন পর পর দিনে ২ থেকে ৩ বার করে স্প্রে করতে পারেন। অথবা ডায়মেক্রন ০.৫ গ্রাম ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিয়ে স্প্রে করতে পারেন। তাহলে কান্ড বা ডগা ছিদ্রকারী পোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

বস্তায় আদা চাষ করার পর ফসল তোলার সময়

বস্তায় আদা চাষ করার পর ফসল তোলার সময় সম্পর্কে জানা জরুরী। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কোন সময় ফসল তুলতে হবে? সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাসে আদা লাগানোর উপযুক্ত সময়। সাধারণত এই সময় আদা লাগিয়ে জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে আদা তোলা যায়। আদার পাতা হলুদ রং ধারণ করলে সাধারণত আদা পরিপক্ক হয়ে যায়। এই সময় আদা তোলা যায়।

৬ থেকে ৮ মাস পরে সবুজ আদা তুলতে পারবেন। আর যদি পরিপক্ক আদা সংগ্রহ করতে চান। তাহলে ৮ থেকে ১০  মাস পরে আদা তুলুন। পরবর্তীতে আপনি যদি আবার আদা চাষ করতে চান। তাহলে কুঁড়িসহ কিছু কন্দ পরবর্তীতে লাগানোর জন‍্য তুলে রাখতে পারেন। সাধারণত প্রতি বস্তায় আদার জাতের উপর নির্ভর করে ১ থেকে ৩ কেজি পরিমাণ আদার ফলন হয়।

আদা চাষ করার জন্য কিছু জিজ্ঞেসিতো প্রশ্নের উত্তর 

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য কিরকম মাটি উপযুক্ত?

উত্তরঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য  দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। মাটির পিএইচ মান ৫.৫ থেকে ৬.৫ থাকা উত্তম।

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য কোন সময় উপযুক্ত?

উত্তরঃ রাস্তায় আদা চাষের জন্য এপ্রিল থেকে মে মাস উপযুক্ত সময়। তবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে আদা চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত সময়।

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা  লাগানোর জন্য কোন স্থান উপযুক্ত?

উত্তরঃ বস্তায় আদা লাগানোর জন্য ৩০% থেকে ৪০% ছায়াযুক্ত স্থান উপযুক্তহ। খেয়াল রাখতে হবে দিনের ২ থেকে ৩ ভাগ আলো যেন আদা লাগানোর স্থানে পড়ে।

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য কোন জাত উত্তম?

উত্তরঃ চাষের জন্য বারি আদা১, বারি আদা ২, বারি আদা ৩ জাত উত্তম।

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য কোন বস্তা উত্তম?

উত্তরঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য সিমেন্টের বস্তা বেশি উত্তম।

প্রশ্নঃ বস্তায় আদা চাষের জন্য প্রতি বস্তায় কত খরচ হয়?

উত্তর বস্তায় আদা চাষের জন্য প্রতি বস্তায় ২০ থেকে ৩৫ টাকা খরচ হয়।

লেখকের শেষে কথা (বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি)

আজকের এই আর্টিকেলটিতে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে এই সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আপনি এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত বেশি আদা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। এর ফলে আপনি কিছু অর্থ উপার্জন করার মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এর ফলে আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনরাও এই পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পারবে। আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরাম্ভ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url