গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না


গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না সেই বিষয়ে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও পেটের শিশুর জন্য অবশ্যই সঠিক সবজি ও ফল বাছায় করতে হবে। 

গর্ভাবস্থায়-কি-কি-সবজি-ও-ফল-খাওয়া-যাবে-না

কিছু কিছু সবজি ও ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। তাই অবশ্যই সেসব ফল ও সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই গর্ভবতী মায়ের জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। গর্ভাবস্থায় সকল বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। কিছু ফল ও সবজি রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খাওয়া গর্ভবতী মা ও বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। তাই বিশেষজ্ঞরা কিছু সবজি ও ফল খাওয়া থেকে গর্ভবতী মাকে বিরত থাকতে বলেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ব অবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবেনা।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা 

  • অঙ্কুরিত বীজ ও খাদ্যশস্যঃ অঙ্কুরিত বীজ ও খাদ্যশস্য ভালোভাবে সিদ্ধ করে গর্ভবতী মা যদি না খায়। তাহলে গর্ভবতী মায়ের ই কোলাই এবং সালমোনেলা সংক্রমণর ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • কাঁচা পেঁপেঃ কাঁচা পেঁপেতে ল্যাটেক্স রয়েছে। যা জরায়ুর সংকোচন করে গর্ভপাত করতে পারে।
  • করলাঃ করলাতে থাকা মারোডিসিন সেপোনিক গ্লাইকোলাইসিস পদার্থ গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • কাঁচা মুলাঃ কাঁচা মুলা গর্ভবতী মা খাওয়ার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার না করে খায়। তাহলে কাঁচা মুলাতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গর্ভবতী মা ও শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
  • এলোভেরাঃ এলোভেরাতে‌ থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • সজিনাঃ সজিনাতে থাকা আলফা সিটেস্টেরল নামক পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মায়ের গর্ভপাত করতে পারে।
  • বেগুনঃ বেগুন খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের এলার্জির সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে বেগুন খাওয়ার ফলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • কচুর লতিঃ কচুর লতিতে থাকা অক্সলেট গর্ভবতী মায়ের ক্যালসিয়ামের সমস্যা করতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
  • আনারসঃ আনারসে থাকা ব্রোমেলাইন এনজাইম জরায়ুর গর্ভমুখ নরম করে ও জরায়ুর সংকোচন বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে গর্ভপাত এর ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • তেঁতুলঃ তেঁতুলে থাকা অতিরিক্ত ভিটামিন সি প্রোজেস্টেরন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। তাই গর্ভবতী মা যদি প্রথম মাসে অতিরিক্ত তেঁতুল খায়। তাহলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • আঙ্গুরঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস আঙ্গুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ আঙ্গুরে রেডভেরাট্রল নামক একটি যৌগ রয়েছে। এই যৌগটি গর্ভবতী মায়ের জন্য বিষাক্ত।
  • ফলমূলের রসঃ ফলমূলের রসে অনেক কম পরিমাণে ফাইবার থাকে। এর ফলে গর্ভবতী মায়ের হজমের সমস্যা হতে পারে।
  • কলাঃ কলা খাওয়ার ফলে অনেক গর্ভবতী মায়ের এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে। এজন্য অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও যাদের কলা খেলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। তাদের কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আমার মতে, গর্ভাবস্থায় যে কোন সবজি এবং ফল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। এর ফলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সকল খাবার খেলে এবং অন্যান্য সকল বিষয় মেনে চললে গর্ভবতী মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ থাকবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া উপকারী

আমাদের সুস্থ ও ভালো রাখতে সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবজি গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সবজিতে থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মা ও পেটের শিশুকে সুস্থ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।  তাই গর্ভবতী মাকে অবশ্যই নিয়মিত সবজি খেতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া উপকারী?

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়

  • শতমূলীঃ শতমূলিতে থাকা ফাইবার ফলের ভিটামিন কে গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থ বিকাশ গঠনে সহায়তা করে।
  • কুমড়াঃ কুমড়াতে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন গর্ভবতী মায়ের দৃষ্টিশক্তি ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ফুলকপিঃ ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন কে, ভিটামিন সি ও ফোলেট পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের শিশুর সুস্থ বিকাশ গঠনে সাহায্য করে।
  • বাঁধাকপিঃ বাঁধাকপিতে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি  ফোলেট রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • মটরশুঁটিরঃ মটরশুটিতে ভিটামিন বি, ফাইবার, প্রোটিন রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ গঠনে সহায়তা করে।
  • সিমঃ সিমে থাকা ফোলেট ও আয়রন গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থ বিকাশ গঠনে সাহায্য করে।
  • গাজরঃ গাজর বিটা ক্যারোটিনের একটি ভালো উৎস। এই পুষ্টি উপাদানটি গর্ভবতী মায়ের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা ক্যারোটিন গর্ভবতী মায়ের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। গর্ভবতী মায়ের কোষের সুস্থ বিকাশ গঠনে সাহায্য করে।
  • ব্রকলিঃ ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • পালং শাকঃ পালং শাক ভিটামিন কে, ফলিক অ্যাসিড ও আয়রন এর একটি ভালো উৎস। এই পুষ্টি উপাদানগুলি গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ গঠনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া নিরাপদ? গর্ভবতী মা এই বিষয় নিয়ে চিন্তিতে থাকেন। কারণ ক্ষতিকর ফল খাওয়ার ফলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মাকে অবশ্যই নিরাপদ ও সুষম ফল খেতে হবে। এর ফলে  গর্ভবতী মা পেটের বাচ্চা উভয়ই সুস্থ থাকে। পেটের শিশুর সুস্থভাবে বিকাশ ঘটে। কিছু কিছু ফল রয়েছে। সেই ফলগুলো মা ও পেটের শিশু উভয়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

গর্ভাবস্থায়-কি-কি-ফল-খাওয়া-নিরাপদ

  • অ্যাভোকাডোঃ অ্যাভোকাডোতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি, পটাশিয়াম এবং ফলিক এসিড ভ্রুনের নিউরাল টিউব সুস্থ বিকাশ গঠনে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের পায়ের খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রবেরিঃ স্ট্রবেরি ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর একটি ভালো উৎস। এই পুষ্টি উপাদান গুলি ভ্রুনের মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশে সাহায্য করে।
  • রামবেরিঃ রামবেরিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার ভ্রুনের সুস্থ মস্তিষ্ক বিকাশ গঠনে সাহায্য করে থাকে।
  • ব্লুবেরিঃ ব্লুবেরিতে থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভ্রুনের সুস্থ মস্তিষ্ক বিকাশ গঠনে সহায়তা করে।
  • আমঃ আমে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। তবে অবশ্যই গর্ভবতী মাকে অতিরিক্ত পরিমাণে আম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পেয়ারাঃ পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পেয়ারা প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল।
  • কমলাঃ কমলাতে থাকা ফলিক এসিড এবং ভিটামিন সি ভ্রুনের মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড সুস্থ বিকাশ গঠনে সাহায্য করে। আম আয়রন শোষণ করতে সহায়তা করে থাকে
  • আপেলঃ আপেলে পটাশিয়াম, ফাইবার এবং আয়রন রয়েছে। যা গর্ভবতী মায়ের রক্ত শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভের শিশুর অ্যাজমা এবং এলার্জির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • কলাঃ কলাতে থাকা ভিটামিন বি ৬ এবং পটাশিয়াম গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের বমি বমি ভাব কমাতেও সাহায্য করে থাকে। তবে অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে প্রতিদিন একটির বেশি কলা খাওয়া উচিত নয়

গর্ভাবস্থায় সাগর কলা খাওয়া কি ভালো

গর্ভাবস্থায় সাগর কলা খাওয়া কি ভালো? এই বিষয়ে অনেকেই জানতে চেয়ে থাকে। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো গর্ভাবস্থায় সাগর কলা খাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ। ভালো সাগর কলা একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল। সাগর কলাতে থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মা এবং পেটের শিশু উভয়ের জন্য প্রচুর উপকারী। তবে গর্ভবতী মাকে অবশ্যই সাগরকলা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিমিত পরিমানে সাগর কলা খেতে হবে।

  • ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে গর্ভবতী মা ও পেটের শিশু সুস্থ থাকে। 
  • ভিটামিন বি৬ঃ ভিটামিন বি৬ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের মর্নিং সিকনেস কমায়। গর্ভবতী মায়ের  বমি বমি ভাব কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • ক্যালসিয়ামঃ সাগর কলাতে থাকা ক্যালসিয়াম গর্ভবতী মায়ের পেটের শিশুর নখ, দাঁত এবং হাড় গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • পটাশিয়ামঃ সাগর কলাতে থাকা পটাশিয়াম গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • ফাইবারঃ সাগর কলাতে থাকা ফাইবার গর্ভবতী মায়ের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এর ফলে গর্ভবতী মা  কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পায়।
  • আয়রনঃ সাগর কলাতে থাকা আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরি করে গর্ভবতী মায়ের রক্ত শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • কার্বোহাইড্রেটঃ সাগর কলাতে থাকা উচ্চ মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় হরলিক্স খাওয়া কি ভালো

হলিকিক্স বার্লি , গম, দানা দিয়ে তৈরি করা হয়।  কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, ভিটামিন ১২, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, সেলেনিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। যা গর্ভবতী মায়ে জন্য খুবই উপকারী। হরলিক্স গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে গর্ভবতী মা ও পেটের শিশু উভয়ই সুস্থ থাকে। এছাড়াও হরলিক্স গর্ভের শিশুর দাঁত, হাড়, নখ সুস্থভাবে গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়া হরলিক্সে থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন গর্ভাবস্থায় হরলিক্স খাওয়া খুবই ভালো। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা যদি হরলিক্স খায়। তাহলে পেটের শিশুর সুস্থ ভাবে বিকাশ ঘটে। 

হরলিক্স খাওয়ার সময় অবশ্যই চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চিনি খাওয়া গর্ভবতী মা ও পেটের শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় হরলিক্স গর্ভবতী মা এর পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। তবে এর পাশাপাশি অবশ্যই সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এছাড়াও সবচেয়ে উত্তম হবে আপনি গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি করুন। এটি মা ও শিশু উভয়ের জন্য উত্তম।

গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই গর্ভবতী মাকে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কলার মোচা প্রচুর পুষ্টিগণ সম্পূর্ণ একটি সবজি। এটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রচুর উপকারী। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। কলার মোচাতে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা 

  • মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। 
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • হরমোনের ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। 
  • মুড সুইং নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। 
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 
  • রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় খাবার খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মাকে অবশ্যই ডায়েট অনুসরণ করে চলতে হবে। এছাড়াও গর্ভবতী মাকে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। গর্ভবতী মাকে  সঠিকভাবে খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাদ্যাভাস গর্ভবতী মা ও পেটের শিশু সুস্থ  থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কিভাবে খাবার খাবে? 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়ার উপকারিতা

  • গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের কখনোই একসঙ্গে বেশি খাবার খাওয়া উচিত নয়।  দিনে ৫ থেকে ৬ বার পরিমিত পরিমানে খাবার খাওয়া উচিত। 
  • গর্ভবতী মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীর হাইড্রেট থাকে। এর ফলে  বর্জ্য পদার্থ খুব সহজে নির্গত হয়ে। 
  • গর্ভবতী মাকে অতিরিক্ত তেল মসলা এবং ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়। 
  • সব রকমের অস্বাস্থ্যকর  খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। 
  • স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কার্বোহাইড্রেট আয়রন ক্যালসিয়াম প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সুষম ও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে।
  • সবচেয়ে উত্তম উপায় হচ্ছে গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক খাদ্য তালিকা তৈরি করা। সেই খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাওয়া। 

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া উচিত নয়

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে। কারণ একটি ভুল পদক্ষেপ গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাদ্য তালিকা তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সঠিক খাবার খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ থাকে এবং গর্ভের শিশু সুস্থভাবে বিকাশ ঘটে। তবে গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ সেই খাবারগুলো খাওয়া মা ও শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। আসুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া উচিত নয়?

গর্ভাবস্থায়-কি-কি-খাওয়া-উচিত-নয়

  • কাঁচা ডিম খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • আস্তরিত দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  • উচ্চ পারদ যুক্ত মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  • অতিরিক্ত তেল মশলা যুক্ত এবং ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়।
  • অস্বাস্থ্যকর ভেষজ চা খাওয়া উচিত নয়।
  • সিগারেট এবং অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। 
  • অপরিপক্ক পনির বা চিজ খাওয়া উচিত নয়।
  • অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত ড্রিঙ্ক, কফি, চা খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। 
  • অপরিষ্কার এবং দূষিত পানি বা শরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমনঃ প্রসেস মাংস, সালামি সসেজ খাবার অবশ্যই গর্ভবতী মাকে এড়িয়ে চলতে হবে।

গর্ভাবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কম ঘুম হওয়া কি স্বাভাবিক?

উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ও শারীরিক ও অস্বস্তির কারণে ঘুম কম হয়। এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। 

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কতক্ষণ হাঁটা ভালো? 

উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটা ভালো।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কিভাবে ঘুমানো ঠিক?

উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় বামদিকে ঘুরে ঘুমানো ভালো। কেননা বামদিকে ঘুমানোর ফলে গর্ভবতী মায়ের রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হয়। এছাড়াও পেটের শিশুর অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কোন সময় প্রথম আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা ভালো?

উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা ভালো। 

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কখন পেটের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে পারে? 

উত্তরঃ ১৮ থেকে ২০ সপ্তাহ পর বা ৪ থেকে ৫ মাস পরে পেটের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে পারা যায়।

লেখক এর শেষ কথা (গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না)

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি ও ফল খাওয়া যাবে না। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিয়ে আরো অন্যান্য বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য অবশ্যই সঠিক খাবার বাছাই করতে হবে। কারণ সঠিক খাবার খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশু সুস্থ থাকে। 

এছাড়াও গর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ গঠনে গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য সকল বিষয় ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। গর্ভবতী মাকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। পর্যাপ্তভাবে বিশ্রাম নিতে হবে। মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। হালকাভাবে হাটাহাটি করতে হবে। গর্ভবতী মাকে অবশ্যই সকল বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরাম্ভ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url